ব্যর্থতার দায়ে অপসারিত : তিনি যখন দেন ছবক!

১৯৯৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে। তখন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ছিলো ১৬ শ মেগাওয়াট। এরপর ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তারা ৫ বছর ক্ষমতায় থেকে যখন বিদায় নেয় তখন বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে হয় ৪ হাজার মেগাওয়াট।
২০০১ সালে আবার ক্ষমতায় আসে বিএনপি। তখন বিদ্যুৎপ্রতিমন্ত্রী ছিলেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু । তার ব্যর্থতায় লোডশেডিং আবার বাড়তে থাকে। খোদ রাজধানীতেই তখন ৬ থেকে ৮ ঘন্টা লোডশেডিং হতো। চারদিকে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার। তীব্র আন্দোলনের মুখে হাসান মাহমুদ টুকুকে মন্ত্রীর পদ থেকে অপসারন করা হয়।
এর কিছূদিন পর বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে তখন আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া ৪ হাজার মেগাওয়াট থেকে ৮শ মেগাওয়াট কমে উৎপাদন দাঁড়ায় ৩২শ মেগাওয়াট। ৫ বছরে ৮ শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কমানো সেই সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সম্প্রতি দেশব্যাপী লোডশেডিং নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
লোডশেডিং নিয়ে সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যখন শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে(কথাটি আসলে শগভাগ বিদ্দ্যুতায়ন) সক্ষম হয়েছি, তারপরও কেন এই সিদ্ধান্তে(বিদ্দ্যুৎ সাশ্রয়) আসতে হচ্ছে?
তার এমন সমালোচনা ও প্রশ্নের উত্তরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের একজন অধ্যাপক বলেন, করোনার ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধ বিশ্বকে নতুন সঙ্কটে ফেলেছে।বিশেষ করে গ্যাস ও জ্বালানি খাতে।এখন বিশ্বের বহু উন্নত দেশকেও ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট করতে হচ্ছে। এটি সরকারের দায় নয়।
সমালোচনা করতে গিয়ে সাবেক মন্ত্রী হয়তো ভুলেই গিয়েছেন যে তিনি ছিলেন একজন ব্যর্থ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী যখন কোনও জাতীয় বা বৈশ্বিক কোনও সঙ্কট ছিলোনা। উল্টো আগের আওয়ামীলীগ সরকার কর্তৃক বৃদ্ধি করা বিদ্যুৎ থেকেও ৮শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কমিয়ে ফেলেছিলেন। কাজেই ব্যর্থতার দায় নিয়ে অপসারিত মন্ত্রী যখন উল্টো প্রশ্ন করেন,জাতিকে ছবক দেন সেটা বড়ই বেমানান।
আর তিনি হয়তো এটাও ভূলে গেছেন যে এই সরকারই প্রথম দেশের শতভাগ জনগণকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এনেছে। কিন্তু বৈশ্বিক সমস্যার কারণে অন্যান্য উন্নত রাষ্ট্র যেভাবে এই সংকট কাটাতে চেষ্টা করছে, বাংলাদেশও ঠিক সেই পথেই হাঁটছে।